কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন? ব্যবসা শুরু করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এরজন্য প্রয়োজন সঠিক মার্কেট রিসার্চ, কাস্টমার আনলাইসিস। আপনার এই যাত্রাকে সহজ করে তুলতে, আমরা এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্যই সাজিয়েছি।

কিভাবে ব্যবসার হিসাব রাখবেন সহজে? 

ব্যবসার প্রধান উদ্দেশ্য হল মুনাফা অর্জন করা।  ব্যবসায়ীরা কম দামে পণ্য কিনে বা কম খরচে উৎপাদন করে বেশি দামে বিক্রির চেষ্টা করে। এর মাধ্যমেই তারা মুনাফা অর্জন করে থাকেন। আর মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য না থাকলে কোনো কাজ ব্যবসায় হিসেবে বিবেচিত হবে না। 

মার্কেট রিসার্চ ব্যবসা চালানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আপনাকে কাস্টমারকে কী চায় তা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। মার্কেট রিসার্চ শুধুমাত্র একটি গবেষণাই নয়, এটি আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে সাহায্য করে থাকে।

প্রোডাক্ট সোর্সিং

আপনি কি জানেন প্রোডাক্ট সোর্সিং বলতে কি বোঝায়? যদি না জেনে থাকেন, তাহলে আসুন এবার জেনে নেই প্রোডাক্ট সোর্সিং কেন প্রয়োজন!

সঠিকভাবে প্রোডাক্ট সোর্সিং করা ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রোডাক্ট সোর্সিং ঠিকমতো না করলে ব্যবসায় নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

একটি সোর্সিং এর উপর নির্ভর না হয়ে একাধিক সোর্সিং রাখা উচিত। যাতে করে বিপদে সমস‍্যা না হয়।

লীন ম্যানেজমেন্ট – হল খরচ কমানো এবং সেইসাথে রাজস্ব বাড়ানো। এর কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে

এই সিস্টেম এর সুবিধা গুলো হলঃ

  • আপনাকে একবারে অনেক ক্যাশ ইনভেস্ট করা লাগবেনা 
  • এছাড়াও আপনি ক্যাশ অন্য জায়গাতে ইনভেস্ট করে বাড়তি আয় করতে পারে

এই সিস্টেম এর অসুবিধা গুলো হলঃ

  • বেশি ক্রয় না করাতে, দাম একটু বেশি পরতে পারে
  • লাভের অংশ কমে যেতে পারে

বাল্ক ম্যানেজমেন্ট – আপনি বেশি করে কিনে, কম দামে বিক্রি করে, বেশি লাভ করতে পারেন। সাপ্লাইয়ার না থাকলেও, আপনি ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন।

যদিও এই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর ও কিছু অসুবিধা রয়েছে – যেমন বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী, সব কিছুর দাম বেড়েই চলছে, কিন্তু বেচা-বিক্রি তেমন বাড়ছে না। তখন আপনার স্টককে ক্যাশ করতে সময় লেগে যেতে পারে।

তাই ব্যবসার উন্নতি করতে হলে, আপনাকে সার্বিক অবস্থা সব সময় বিবেচনা করে সিধান্ত নিতে হবে।

সেলস চ্যানেল

আপনি দোকান, নিজস্ব এসআর, অনলাইন, অ্যাপ, ওয়েবসাইট, বা সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে সেল করতে পারেন।

এখন আসুন জেনে নেই – আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অনুযায়ী কোন সেলস চ্যানেলটি ব্যবহার করলে আপনি ভাল রেজাল্ট পাবেন।

আপনি যদি নিত্য প্রয়োজনীয় আইটেম যেমন চাল, ডাল এগুলো বিক্রি করে থাকেন, তাহলে দোকানের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে পুর দেশজুড়ে সেল করতে পারেন। 

এখন দোকান থেকে কিভাবে বিক্রি বাড়াতে পারবেন সেটা নিয়ে কথা বলব – আপনার দোকানের মার্কেটিং, ব্রান্ডিং – আপনার ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও ভাল কাস্টমার সার্ভিস ও সময়মত স্টক রাখা বিক্রি বাড়াতে সাহায্য করে। ঠিকমত স্টক রাখা প্রয়োজন, যাতে করে কাস্টমারকে ফিরিয়ে দিতে না হয়।  

আপনি কিভাবে স্টক রাখছেন?

আপনি কি জানেন – হিসাবীর স্বয়ংক্রিয় স্টক ম্যানেজমেন্ট ফিচারটি আপনার স্টক সহজে পরিচালনা করতে সাহায্য করে এবং এটি কোনও ঝামেলা ছাড়াই আপনাকে অর্ডার দিতে সহায়তা করে। এছাড়াও স্টক কমে গেলে পাবেন নোটিফিকেশান এলার্ট।

হাতেকলমে মজুদের হিসাব থেকে এই সুবিধা গুলো কি কখনও পাবেন?

অবাক হলেও সত্য – অ্যাপের মাধ্যমে এখন বিক্রি সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। হিসাবী এর মাধ্যমে মাত্র ১ ক্লিক এ নিজস্ব অ্যাপ বানিয়ে নিতে পারেন, নিজের পছন্দমত থিম দিয়ে। অনলাইন এ বিক্রি করে আপনার দোকানকে নিয়ে যান এখন মানুষের কাছে।

আসুন এখন জেনে নেই এসআর কিভাবে বিক্রি বাড়াতে পারে?

এসআর দিয়ে বিক্রি বাড়ানোর জন্য যেমন প্রয়োজন ট্রেনিং, ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট। ঠিক তেমনি সঠিকভাবে সেল প্রাইস রেজিস্টার করা হয়েছে কিনা সেটাও নজর রাখা প্রয়োজন।

হিসাবীর অ্যাক্সেস ম্যানেজমেন্ট এর সাহায্যে আপনি নতুন পদবী তৈরি করতে পারবেন এবং সেই পদবী গুলকে সীমিত অ্যাক্সেস দিতে পারেন। এবং যেকোনো ব্যক্তিকে বানানো পদবী দিয়ে দিতে পারেন।

জেনে নিন এর সুবিধা গুলো হল:

  • অসংখ্য ভিউ এবং এডিট অ্যাক্সেস
  • খাত অনুযায়ী অ্যাক্সেস বদল
  • এক অ্যাকাউন্টে একাধিক অ্যাক্সেস
  • নিজের মত পদবী দিয়ে অ্যাক্সেস দেয়ার সুবিধা

টেলিফোনের সাহায্যে আপনি খুব সহজে আপনার পণ্য বা সার্ভিস কাস্টমার এর চাহিদা অনুযায়ী। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে – কিভাবে কাস্টমার এর ফোন নাম্বার পাওয়া সম্ভব। 

হিসাবীর “যোগাযোগ ফিচারটি আপনার নিজস্ব কাস্টমাইজড যোগাযোগের তালিকা, কাস্টমার, স্টাফ এবং সাপ্লায়ার এর তথ্য নিয়ে তৈরী । 

হিসাবী বিজনেস ম্যানেজারের যোগাযোগের তালিকা একটি ব্যবসায়িক যোগাযোগ এর খাতা ম্যানেজ করতে সাহায্য করে। 

যোগাযোগ অপশন একজন বিক্রেতাকে যথাযথ তালিকা, ইএমআই এবং আরও অনেক কিছু তৈরি করতে সাহায্য করে। সর্বোপরি যোগাযোগ তালিকার সর্বোত্তম ব্যবহার হল একটি কাস্টমাইজড ক্লায়েন্ট তালিকা তৈরি করা যা ব্যবসার মালিক ম্যানেজ রাখতে পারেন।

এর মাধ্যমে –

  • একই স্ক্রিন থেকে সবার সাথে যোগাযোগ ম্যানেজ করা যাবে সহজে
  • কাস্টমারের তালিকা, তাদের ক্রয়ের ইতিহাস, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা সহ বিভিন্ন তথ্য সেইভ রাখা যাবে
  • কর্মচারীর হিসাব, তাদের বেতন ও অন্যান্য তথ্যাবলি সংরক্ষন করা যাবে, এবং কোন কর্মচারী কোন পণ্য বিক্রি করলো তার ট্র্যাক রাখা যাবে।
  • কাস্টমারের তালিকা, তাদের ক্রয়ের ইতিহাস, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা সহ বিভিন্ন তথ্য সেইভ রাখা যাবে
  • সাপ্লায়ার এর নাম, তাদের সাপ্লাই এর ইতিহাস, যোগাযোগ এর তথ্যাবলি সেইভ রাখা যাবে

মার্কেটিং 4P’s

আসুন এখন জেনে নেই – মার্কেটিং 4P’s সম্পর্কে।

  • প্রোডাক্ট

প্রথমেই বলব প্রোডাক্ট সম্পর্কে। ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট কিন্তু অবশ্যই লাগবে। না হলে ব্যবসা হবে না। সার্ভিস এর ক্ষেত্রে হয়তো সরাসরি প্রোডাক্ট লাগে না কিন্তু এটাও প্রোডাক্টের মধ্যে পড়ে । 

সহজ কথায় যেটা বেচা যায় আর টাকা পাওয়া যায় । তো এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মূল উপাদান ব্যবসার জন্য। আপনাকে এটার পেছনে সময় দিতে হবে ।

বাজারে এটার চাহিদা আছে নাকি সেটাও রিসার্চ করে দেখতে হবে । যতরকম সমস্যা থাকতে পারে ওই প্রোডাক্ট নিয়ে ভেবেচিন্তে এরপর সলিউশনটা করতে হবে ।

  • প্রাইস

প্রোডাক্ট যেমন হবে তুলনামূলক বাজারের চাহিদা, কম্পিটিশন, উৎপাদন খরচ, প্রোমোশন খরচ ইত্যাদি বিচার বিশ্লেষণ করে দাম নির্ধারণ করতে হবে। 

স্কিমিং প্রাইসিং – হল কম্পেটিটর থেকে একটু বেশি দামে বিক্রি করা। এতে করে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয় এবং লাভ বেশি হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে দাম বেশি হওয়ার কারনে বিক্রি নাও হতে পারে।

আপনাকে অবশ্যই মার্কেটের অবস্থা দেখে এটি অ্যাপ্লাই করতে হবে।

পেনিট্রেশন প্রাইসিং – কম্পেটিটর থেকে একটু কম দামে বিক্রি করা। নতুন কোন পণ্য মার্কেট এ আসলে চাহিদা ও পরিস্থিতি বুঝে এটি আপনি অ্যাপ্লাই করতে পারেন।

এতে আপনার বিক্রি বেশি ও কাস্টমারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে। কিন্তু এই সিস্টেমটি ব্যবহার করলে আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট হতে পারে, এছাড়াও কাস্টমাররা ভাবতে পারে দাম কম হওয়াতে প্রোডাক্ট এর মান খারাপ।

কম্পিটিটিভ প্রাইসিং – কম্পেটিটর এর সাথে মিলিয়ে  প্রাইসটা ফিক্স করাকে কম্পিটিটিভ প্রাইসিং বলে।

  • প্রোমোশন

এবার আসুন জেনে নেই প্রোমোশন সম্পর্কে। আপনার ব্যবসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এই প্রোমোশন বা মার্কেটিং। 

আপনি যদি প্রোমশন ঠিক মত না করেন, তাহলে আপনি কি জানেন আপনার বাৎসরিক রেভেনিউ কত হবে? প্রায় শুন্য।

হিসাবীর মাধ্যমে এখন আপনি খুব সহজেই প্রোমশন করে, আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ বানাতে পারেন। বর্তমান সময়ে প্রোমশন এর জন্য মোবাইল একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। 

হিসাবীর থেকে অ্যাপ বানিয়ে বা বুস্টিং করে আপনি আপনার ব্যবসাকে নিয়ে যেতে পারেন মানুষের হাতের মুঠোতে এবং বাড়াতে পারেন বিক্রি খুব সহজে। 

  • প্লেস

প্লেস মানে যেখানে আপনি আপনার পণ্য বিক্রি করবেন। আপনার পণ্য লঞ্চ করার জন্য আপনি সঠিক জায়গা বেছে নিয়েছেন তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

SWOT আনালাইসিস

এখন কথা বলব SWOT আনালাইসিস নিয়ে। কোন ব্যবসার  সবলতা, দূর্বলতা, সুযোগ, হুমকি চিহ্নিত করাই SWOT বিশ্লেষণ।

আপনি কি আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী আপনার শক্তিশালী পয়েন্ট গুলো চিহ্নিত করতে পারছেন? 

যদি না পেরে থাকেন, তাহলে আমাদের কাস্টমার সার্ভিস এর সাথে এখনই কথা বলে নিন। আপনি যদি কোথাও আটকে যান, সেটা হবে আপনার দুর্বলতা।

মার্কেট বুঝে খুজে বের করুন আপনার সুযোগ গুলো। করোনা ভাইরাস এর মত অনেক থ্রেট বা হুমকি এসেও আপনার সেল কমিয়ে দিতে পারে।

 

Zahin Juvi

About Zahin Juvi

EN